শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কবে থেকে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হবে জানালেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের যে আহ্বান জানালেন শিক্ষামন্ত্রী চেয়ার বেয়ে উঠে পুলিশ কর্মকর্তার আঙুলে সাপের কামড় ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘর ছাড়া বিএনপি নেতারা, ভয়ে আছে কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০৪ মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই কাঠালিয়ায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে বাঁধা, পুলিশের লাঠিচার্জ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ, আহত-৪ কাঁঠালিয়ায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মসজিদের ইমামের সংবাদ সম্মেলন কাঠালিয়ায় হেলিকপ্টারে করে বউ আনলেন সুমন তালুকদার কোটা আন্দোলন : এক দিনে গেল ছয় প্রাণ
‘আপনার ঘুষ খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি’ : প্রকৌশলীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা

‘আপনার ঘুষ খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি’ : প্রকৌশলীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকার ১১টি স্থানে ৩৩ হাজার কেভি লাইনের ওপর গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। এ ছাড়া রেমালে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে ও খুঁটি ভেঙে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ও পল্লী বিদ্যুতের প্রায় দেড় লাখ গ্রাহক।

জেলা শহরসহ চার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চার দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। বুধবার (২৯ মে) সকালে রাজাপুর উপজেলা শহর এবং রাতে ঝালকাঠি শহর ও নলছিটি শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও ৯৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবঞ্চিত ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আলমসহ (৭০) ওই এলাকার দুই শতাধিক পরিবার। এ ছাড়া কাঁঠালিয়া উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১২০ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ।

এ কারণে ঝালকাঠি ওজোপাডিকো অফিসে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আলম। বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করে বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আলম দায়িত্বরত ওজোপাডিকোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো. আব্দুস সালামকে বলেন, ‘আপনার ঘুষ খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে রিজাইন দিয়ে চলে যাবেন।’

ঘূর্ণিঝড় রেমালে বিদ্যুতের তার ছিড়ে থাকায় ৯৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবঞ্চিত এই মুক্তিযোদ্ধা। বিদ্যুৎ লাইন না পাওয়ায় তীব্র গরমে কষ্টে দিন কাটছে তার। এতে তিনিসহ বিদ্যুৎবঞ্চিত হয়ে আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা পানির তীব্র সংকটে পড়েন। বিদ্যুতের অভাবে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। জেলা শহরের বাসিন্দারা রান্নাবান্না ও গৃহস্থালির কাজে পৌর কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা পানির ওপর নির্ভরশীল। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আলম প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান, রেমালের চার দিন পার হলেও এখনও কেন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি? প্রকৌশলীকে বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব কী ঘুষ খাওয়া? ঘুষ খাওয়ার জন্য কী দেশ স্বাধীন করেছি?’ বলার পর আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে প্রকৌশলীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অফিস থেকে চলে যান মুক্তিযোদ্ধা।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আলম বলেন, ‘গত রোববার থেকে একটানা চার দিন অতিবাহিত হলেও আমি বিদ্যুৎ পাইনি। বুধবার রাতে শহরের কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎ পেয়েছে, তাহলে আমি কেন পেলাম না। আমি বৃদ্ধ মানুষ, এই গরমে কি বিদ্যুৎ ছাড়া থাকা যায়। তারপর আবার পানির সংকট। কেননা বিদ্যুৎ না থাকলে পানি আসবে কেমনে। পানির জন্য তীব্র গরমে গোসল, খাবার পানি, বাথরুমের পরিচ্ছন্নতার কাজে অনেক কষ্ট করতে হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো. আব্দুস সালাম বলেন, ঝড়ে ঝালকাঠি শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে ও খুঁটি ভেঙে গেছে। যার জন্য বিদ্যুৎ অফিসের লোকসহ স্থানীয় শ্রমিক ভাড়ায় এনে কাজ করাচ্ছি, তারপরও সব স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন যাদের বিদ্যুৎ লাইন সচল করে দিতে পারব তারা ভালো বলবে, ধন্যবাদ জানাবে। আর যাদের দিতে পারব না তারা খারাপ বলবে। যেহেতু এই ডিপার্টমেন্টে চাকরি করি সেহেতু এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। দুই-তিন দিনের মধ্যে শহরের সব স্থানেই বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দেওয়া হবে।

জেলার ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মেরামতের জন্য দিন-রাত বিদ্যুৎ অফিসের লোকসহ ভাড়ায় লোক দিয়েও কাজ করানো হচ্ছে। এত পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে যা খুব দ্রুত সম্পূর্ণ করা সম্ভব না, সময় লাগবে। আমরা আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি জেলার সব স্থানে বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে পারব।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

সম্পাদকীয় কার্যালয়: কাঠালিয়া বার্তা
কলেজ রোড, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি।
মোবাইল: 01774 937755









Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana